ভয়ংকর খুনি দল, মানুষ মারা যাদের কাছে পানি ভাত
বেলাব অটো চালক হত্যা মামলায় খুনিদের আদালতে স্বীকারোক্তি
তৌহিদুর রহমান: নরসিংদীর বেলাব বীরবাঘবের এলাকার অটো রিকশা চালক জিল্লুর রহমানের খুনিদের সনাক্ত করতে গিয়ে ভয়ংকর এক খুনি দলের সন্ধান পাওয়া গেছে। যারা অটো রিকশা ছিনতাই করতে গিয়ে অটোচালক কে খুন করতে দ্বিধাবোধ করেনা। এ যেন তাদের কাছে পানি ভাতের মতো ব্যাপার। এদের মধ্যে সুমন নামের একজন সামান্য নেশার টাকার জন্য বেশ কয়েকটি খুন করেছে বলে জানায়। গত মঙ্গলবার নরসিংদী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে এই খুনি চক্রের ৩ জন জিল্লুর হত্যা মামলায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। গত শনিবার গাজীপুর জেলার মীরেরবাজার এলাকা হতে তাদের গ্রেফতার করা হয়। অটোচালক জিল্লু হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকতা উপ-পরিদর্শক রুপণ কুমার সরকার এই খুনি চক্রকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছেন। আদালতে স্বীকারোক্তি দেয়া আসামীরা হলো, কিশোরগঞ্জ জেলার কুলিয়ারচর থানার চরকামালপুর এলাকার আমিনুল মিয়ার ছেলে সোহেল (৩৬), একই এলাকার মুক্তার মিয়ার ছেলে সুলতান (২২) ও নরসিংদীর বেলাব থানার চরবাঘবের এলাকার আসাদ মিয়ার ছেলে ফারুক (২৪)। এ মামলায় আরও গ্রেফতার হয়েছে কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর থানার মধ্যম সালুয়া এলাকার মৃত জাহিদ হোসেন এর ছেলে সুমন (২৭) ও ছিনতাইয়ের অটো রিকশার খরিদদার কথিত খালা কুলিয়ারচর গাইলকাটা এলাকার মিজানুর রহমানের স্ত্রী সুরাইয়া বেগম। সুরাইয়া বেগম এই খুনি দলের কাছ থেকে অল্প টাকায় অটো রিকশা কিনে অন্য জায়গায় বেশী দামে বিক্রি করতো।
আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তি থেকে জানা যায়, গ্রেফতারকৃতরা ও আরো দুজন ঘটনার দিন ডাকাতি করতে বের হয়। বেলাব বীর বাঘবের এরাকার নির্জন রাস্তায় তারা কলাগাছ কেটে ফেলে রাখে। সেখানে জিল্লুর তার অটো রিকশা নিয়ে এসে কলাগাছ দেখে থেমে পড়ে। এসময় ডাকাত সুমন, সোহেল, ও আরো দুজন জিল্লুর কে অটো রিকশা থেকে জোড়পূর্বক নামিয়ে ফেলে ও গামছা দিয়ে তার মুখ বেধে ফেলে। এরপর সুলতান ও পারুক ওই অটো রিকশা নিয়ে কুরিয়ারচরের দিকে চলে যায়। এদিকে সুমন সোহেল ও আরও দুজন জিল্লুর কে মারপিট করে ও গলায় গামছা পেচিয়ে খুন করে লাশ নার্সারীতে ফেলে চলে যায়। ছিনতাইকৃত অটো রিকশাটি খালা সুরাইয়ার কাছে ২২ হাজার টাকায় বিক্রি করে। বিক্রির টাকা তারা সবাই মিলে বাগ বাটোয়ারা করে। বেটে সুমন জানায় নেশার টাকা দিলে সে যে কোন ধরনের কাজ করতে পারে। নেশার টাকার জন্য সে ও তার দল বহু মানুষ কে খুন করেছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক রুপণ কুমার সরকার জানান, এরা একটি ভয়ংকর ডাকাত ও খুনির দল। এ ধরনের অপরাধ করতে করতে তারা নিষ্ঠুর হয়ে গেছে। উক্ত আসামীরা কুলিয়ারচর তথা কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, গাজীপুরসহ বিভিন্ন জায়গায় মানুষ খুন করে অটো রিকশা ছিনতাই করে তাদের কথিত খালার কাছে বিক্রয় করতো। এসব এলাকায় আটো রিকশার চালক হত্যার সাথে তারা জড়িত রয়েছে। তথ্য প্রযুক্তি ও বিভিন্ন কৌশল প্রয়োগ করে তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে। এ ব্যাপারে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইদুর রহমান ও পরিদর্শক জাবেদ মাহমুদ সহযোগীতা করেছেন। বিভিন্ন এলাকায় অটো রিকশা চালক হত্যা মামলায় তাদের সম্পৃক্ততার বিষয় যাচাই বাছাই করা যেতে পারে।
#
৭/২/১৮ইং
No comments:
Post a Comment