Saturday, November 17, 2018

বাশগাড়ী নীলক্ষার সংঘর্ষ নিয়ে নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সংবাদ সম্মেলন


আওয়ামী লীগ দলীয় নয় স্থানীয় বিরোধের ফলেই বারবার সংঘর্ষ দাবী জেলা সভাপতির


তৌহিদুর রহমান: নরসিংদীর রায়পুরার চরাঞ্চল নীলক্ষা ও বাশগাড়ীতে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ৩ জন নিহত হবার ঘটনা সংক্রান্তে সংবাদ সম্মেলন করেছে নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগ। আজ শনিবার বিকেলে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের ব্রীফ করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পানি সম্পদ প্রতি মন্ত্রী লে.কর্ণেল (অব.) নজরুল ইসলাম বীর প্রতিক। সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবী করেন আগামী একাদশ জাতীয় নির্বাচন এর পরিবেশ নষ্ট করতে দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্রে অংশ হিসেবে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আওয়ামী লীগের কোন কোন্দলের কারনে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। নীলক্ষা ও বাশগাড়িতে দীর্ঘ দিন ধরে আধিপত্য বিস্তার কে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ চলে আসছে। দেশের অন্যান্য চরাঞ্চলের মতো নরসিংদীর চরাঞ্চল গুলিতেও  বহুকাল ধরে টেটা যুদ্ধ চলে আসছে। এখানে আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দলের কারনে এই ঘটনা ঘটেনি।
প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, বাশগাড়ী তে সিরাজুল হক ও সাহেদ সরকারের সমর্থকদের মধ্যে ও নীলক্ষায় তাজুল ইসলাম ও হক সরকারের সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। সেই বিরোধের জের ধরেই এই  সংঘর্ষ, টেটাযুদ্ধ গুলি হয়। তারা সেখানকার স্থানীয় প্রভাবশালী তাদের আধিপত্য বিস্তারের লড়াই এটি। এখানে আওয়ামী লীগের নাম আসা দু:খজনক। রায়পুরা উপজেলায় আওয়ামী লীগের একছত্র উপস্থিতি ও আধিপত্য রয়েছে। যুগ যুগ ধরে রায়পুরায় আওয়ামী লীগের আধিপত্য থাকার ফলে বেশীরভাগ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বড় নেতা রয়েছেন। এখন তারা যদি নিজেদের মধ্যে মারামারি করে সেটা তো আওয়ামী লীগের দলীয় কোন ব্যাপার নয়। তিনি আরও জানান অনুসন্ধানে দেখা গেছে উভয় পক্ষের মারামারিতে আওয়ামী লীগের লোক রয়েছে। এমন কি বিএনপির লোকজনও রয়েছে। চরাঞ্চলের মানুষ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অনুসারী হলেও তারা কোন ব্যাক্তি বা গোষ্টির সমর্থক হয়ে কাজ করে। যখন মারামারি শুরু হয় তখন তারা দল নয় ব্যাক্তি বা গোষ্টির সমর্থনে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে। যা আওয়ামী লীগের দলীয় কোন বিষয় কে ঘিড়ে সৃষ্টি হয় না। যখন নরসিংদীতে আমরা একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রেখেছি তখন এসব মারামারি ষড়যন্ত্রমূল বলেই প্রতিয়মান হচ্ছে। তিনি সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন বাশগাড়ী ও নীলক্ষার সংঘর্ষ কে আওয়ামী লীগের সংঘর্ষ হিসেবে প্রচার না করার জন্য।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন ভুইয়া, রায়পুরা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান চৌধুরী ও রায়পুরা থানা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক সাদেকুর রহমান প্রমুখ।
উল্লেখ্য গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের পর থেকেই বাশগাড়ীর সিরাজুল হক চেয়ারম্যান ও সাহেদ সরকারের মধ্যে বিরোধ ও সংঘর্ষ চলে আসছিল। একই নির্বাচন কে কেন্দ্র করে নীলক্ষাতেও বর্তমান চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম ও সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হক সরকারের মধ্যে বিরোধ চলছিল। সেই থেকে তাদের সমর্থকরা বেশ কয়েকবার মারামারিতে জড়িয়ে পরে। সেসব যুদ্ধে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। তারা সবাই আওয়ামী লীগ সমর্থক। মূলত দলীয় প্রতিকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মনোয়ন বঞ্চিত হবার কারনেই এই বিরোধের তৈরী হয়। এই বিরোধের মধ্যেই বাশগাড়ির সাহেদ সরকার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এর কিছুদিন পর চেয়ারম্যান সিরাজুল হক কে গুলি করে হত্যা কওে দুর্বৃত্তরা। ওই সময় সেখানে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটলেও নরসিংদীর পুলিশ সুপার বদলীর সময়ে বাশগাড়িতে আবার শুরু হয় সংঘর্ষ। গুলিতে নিহত হয় এক স্কুল ছাত্র। বাশগাড়িতে ত্রাস সৃষ্টি করে এই গ্রæপ আবার হামলা করে নীলক্ষায়। সেখানে দুই পক্ষের যুদ্ধে নিহত হয় ৩ জন। এ নিয়ে যখন সারা দেশে তোলপাপড় তখন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক জানান নরসিংদীর চরাঞ্চলের সংঘর্ষ ও নিহত হবার ঘটনায় ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন। এর পরই প্রথমবারের মতো চরাঞ্চলের টেটা যুদ্ধ ও সংঘর্ষ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করলো নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগ। 

#
নরসিংদী
১৭/১১/১৮ইং  


No comments:

Post a Comment