Saturday, August 5, 2017

নরসিংদীর চাঞ্চল্যকর দীপা রাণী হত্যা বটি দিয়ে জবাই করে মাকে হত্যা করে ছেলে প্রিতম

নরসিংদীর চাঞ্চল্যকর দীপা রাণী হত্যা
বটি দিয়ে জবাই করে মাকে হত্যা করে ছেলে প্রিতম



তৌহিদুর রহমান:  নরসিংদীর চাঞ্চল্যকর দীপা রানি হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। পরীক্ষা খারাপ দেওয়ায় ছেলে প্রিতম কে গালাগাল করে মা। সে কারনে ক্ষুব্দ হয়ে ধারালো বটি দিয়ে মাকে জবাই করে হত্যা করে ছেলে। হত্যাকান্ড সংগঠতি হওয়ার প্রায় ২৬ দিনের মাথায় এই হত্যা রহস্য উদঘাটন করেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইদুর রহমান। জেলা পুলিশ পুলিশ সুপার আমেনা বেগমের বিশষে নির্দেশনায় মামলাটির ছায়াতদন্ত করতে গিয়ে মূল ঘটনার উন্মোচন করেন তিনি। গত শুক্রবার মাকে হত্যা করার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে নবম শ্রেণীর ছাত্র প্রীতম ভৌমিক। জবানবন্দি শেষে তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে আদালত।

জবানবন্দি ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত জুন মাসের ৮ তারিখ বৃহস্পতিবার নরসিংদী শহরের দেশ প্রিয় রোডে দিন দুপুরে গলা কেটে হত্যা করা হয় গৃহবধূ দীপা রাণী ভৌমিক। এ ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় নরসিংদীসহ সারা দেশে। ঘটনার ইতিবৃত্ত জানতে ও খুনিকে ধরতে ব্যাপকভাবে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। ডাকাতি, চুরি, শত্রুতা বিভিন্ন বিষয়কে মাথায় রেখে তদন্তে নামে পুলিশ। তবে কোন ধরনের মোটিভেই এই হত্যার রহস্য ধরতে পারা যাচ্ছিলনা। নরসিংদী সদর মডেল থানা পুলিশের পাশাপাশি জেলা পুলিশ সুপার এই হত্যা মামলার ছায়া তদন্তের নির্দেশ দেন জেলা গোয়েন্দা শাখাকে। এরপর জেলা গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইদুর রহমান ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে ছেলে প্রীতম কে জ্ঞিাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদে সে মাকে হত্যা করার কথা স্বীকার করে। 
 জেলা গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইদুর রহমান জানান, ছেলে প্রীতম কে গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে এনে প্রথমে তার মার রক্তাক্ত লাশের ছবি দেখানো হয়। এই ছবি দেখে সে অনেকটা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। পড়ে কৌশল প্রয়োগ করে তাকে জিজ্ঞাসা করা হয় কেন মাকে হত্যা করেছে। এতে সে অনেকটা অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে। প্রথমে সে অস্বীকার করলেও একটা সময় সে সব স্বীকার করে হত্যার বর্ণনা দেয়। তারপর তাকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার মাধ্যমে আদালতে পাঠানো হয়। আদালতে সে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। ছেলে প্রীতম বিভিন্ন ধরনের নেশা করতো। যার ফলে সে উগ্র মন-মানসিকতার হয়ে পড়েছে বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা। 
জেলা পুলিশ সুপার আমেনা বেগম বলেন, চাঞ্চল্যকর দীপা রাণী হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছি আমরা। ছেলে মাকে হত্যা করতে পারে বিষয়টি অভাবনীয়। আমরা অন্যান্য মোটিভ নিয়ে তদন্ত করছিলাম। পরিচিত কিংবা পরিবারের লোকদের দ্বারা এই হত্যাকান্ড সংগঠিত হতে পারে বলে প্রতিয়মান হচ্ছিল। সে কারনে আমরা পরিবারের সদস্যদের গতিবিধির উপর নজর রাখছিলাম। বিভিন্নভাবে তদন্তের এক পর্যায়ে তার ছেলে কে সন্দেহ করি আমরা। তারপর কৌশলে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে ঘটনার সাথে জড়িত বলে স্বীকার করে। আদালতে সে জবানবন্দি দিয়েছে। 
নরসিংদীতে ঘটে যাওয়া আভাবনীয় এই হত্যাকান্ড যেন চোখে আঙ্গুল দিয়ে আমাদের সমাজের পারিবারিক অশান্তির ভয়াবহ রুপ দেখিয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার মনে করেন, পারিবারিক সুদৃড় বন্ধন এর অভাব ও মাদকের প্রভাবের ফলেই এমন ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে। এ বিষয়ে তিনি সবাইকে সচেতন থাকার অনুরোধ করেছেন। 


#
তৌহিদুর রহমান, নরসিংদী
৫/৮/১৭ইং



No comments:

Post a Comment