Saturday, November 5, 2016

নরসিংদীর শিবপুরে গ্রামীর ফোনের বিক্রয় কর্মী হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন করেছে গোয়েন্দা পুলিশ আদালতে এক খুনির স্বীকারেক্তি

নরসিংদীর শিবপুরে গ্রামীর ফোনের বিক্রয় কর্মী
হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন করেছে গোয়েন্দা পুলিশ
আদালতে এক খুনির স্বীকারেক্তি


তৌহিদুর রহমান, নরসিংদী: নরসিংদীর শিবপুরে গ্রামীণ ফোনের বিক্রয়কর্মী রাসেল সরকার হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। খুনের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে এক খুনি। তার নাম রনি সরকার (২৪), সে শিবপুর উপজেলার ইটনা গ্রামের আ: বাতেন সরকারের ছেলে। এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত আরও ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।  গ্রেফতারকৃতরা হলো শিবপুর উপজেলার চানপাশা গ্রামের আ: হক এর ছেলে আ: লতিফ (৩০), একই উপজেলার কোন্দারপাড়া গ্রামের আ:বাতেন এর ছেলে মনোয়ার হোসেন মনু (৪৫) ও পাশ্ববর্তী রায়পুরা উপজেলার খৈনকুট এলাকার আব্দুল হামিদ এর ছেলে আমির হোসেন (২২)। এর মধ্যে মনেয়ার হোসেন মনু উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছাড়া পেয়েছে। এই ঘটনার সাথে জড়িত আরও ৪ জনকে ধরতে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। 
গত ২৫ অক্টোবর ভোরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশির উপ-পরিদর্শক ও মামলা তদন্ত কর্মকর্তা রুপন কুমার সরকার রনি সরকারকে গ্রেফতার করেন। তারপর তাকে ওই ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে মোবাইলে বিভিন্ন প্রমান দেখানোর পর সে ঘটনার সাথে জড়িত বলে স্বীকার করে। এরপর সে নরসিংদীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ওয়ায়েজ আল করনীর খাস কামরায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলে মোবাইল ফোনের অবস্থানের তথ্যের উপর ভিত্তি করে জড়িতদের চিহ্নিত করা হয়েছে। এর পর ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়। টাকা ছিনতাই এর উদ্দেশ্যে সন্ত্রাসী মকবুলে নেতৃত্বে ৮ জন এই মিশনে অংশ নেয়। প্রথমে মোটর সাইকেল এর গতিরোধ করে টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে ছিনতাইকারীরা। রাসেল টাকা ব্যাগ না দেওয়ায় ছিনতাইকারীদেও সাথে ধস্তাধস্তি হয়।  এরপর সন্ত্রাসীরা তাকে গুলি করে ব্যাগ নিয়ে যায়। এই মিশনে নেয় মকবুল, ঢাকা থেকে ভাড়া করা পেশাদার কিলার তানভীর, আনোয়ার হোসেন আনার ও আল-আমিন। আল-আমিনই রাসেল কে গুলি করে। তাদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। মকবুল এই ঘটনার মূল হোতা। সে থার্মেক্স গ্র“পের মাইক্রোবাসে গুলি করে ৬০ লক্ষ টাকা ছিনতাই এর সাথেও জড়িত ছিল। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় অস্ত্র ডাকাতিসহ ৮ টি মামলা রয়েছে। তারা একটি সংঘবদ্ধ গ্র“প, ডাকাতি ও ছিনতাই করাই তাদেও পেশা।
মামলার তদন্তের স্বার্থে সংবাদ মাধ্যমকে বিষয়টি এতদিন জানানো হয়নি বলে জােিনয়ছেন তদন্ত কর্মকর্তা। গত ১০ সেপ্টেম্বর সকালে শিবপুর উপজেলার চাদপাশা বাজার হতে মোটর সাইকেল যোগে কুটির বাজার যাওয়ার পথে সন্ত্রাসীরা রাসেল কে গুলি করে টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যায়। আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে নরসিংদী ১০০ শয্যা জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় নিহতের বাবা হানিফ মিয়া অজ্ঞাত আসামী করে পরদিন শিবপুর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তভার দেওয়া হয় গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক রুপন কুমার সরকার কে। ২ মাসেরও কম সময়ে ক্লু লেস এই হত্যা মামলার মূল রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হন তিনি।
 # 
তৌহিদুর রহমান, নরসিংদী
-৫/১১/১৬ইং

2 comments: