নরসিংদীর রায়পুরার নীলক্ষার দাঙ্গার ঘটনায়
৩ টি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ
গ্রেফতার ১৭ জন
তৌহিদুর রহমান, নরসিংদী: নরসিংদীর রাপুরায় দাঙ্গা ও ৪ জন নিহতের ঘটনায় ৩ টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে ১৫০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত প্রায় ২৫০ জনকে আসামী করা হয়েছে। খুন, পুলিশের ওপর হামলা ও বিস্ফোরক আইনে পুলিশ বাদী হয়ে রায়পুরা থানায় এই মামলা ৩ টি দায়ের করে। তবে নিহতের ঘটনায় এখন পর্যন্ত পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো মামলা হয়নি। এ পর্যন্ত পুলিশ ১৭ জনকে গ্রেফতার করেছে। আজ সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডি.আই.জি আবুল কালাম আজাদ। এসময় তিনি সাংবাদিকদেও জানান স্থানীয় দুই নেতার কারনেই এই মারামারির ঘটনা ঘটেছে। তাদেও কে অটক করতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(তদন্ত) মাজহারুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার সকালে রায়পুরা থানায় হত্যা, দাঙ্গা-ফ্যাসাদ,পুলিশের ওপর হামলা ও বিস্ফোরক আইনে পুলিশ বাদী হয়ে আড়াইশ গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেন। রায়পুরা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে বিস্ফোরক আইনে নিলক্ষার আবদুল মতিনকে প্রধান আসামি করে ৮৬ জনের বিরুদ্ধে ও উপ-পরিদর্শক ওবায়দুর রহমান বাদী হয়ে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় সোনাকান্দী গ্রামের তৌকির আহমেদকে প্রধান আসামি করে ১৬০ জনের বিরুদ্ধে এই মামলা দুইটি করেন। এবং জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক রুপন কুমার সরকার বিস্ফোরক সহ আটক নীলক্ষার শেওরাতলীর সোলাইমান কে আসামী কওে ওপর ১ টি মামলা দায়ের করেন। এইদিকে মঙ্গলবারও নিলক্ষার গ্রামগুলোতে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
নরসিংদীর পুলিশ সুপার আমেনা বেগম জানান, নীলক্ষার পরিবেশ স্বাভাবিক করতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৩ টি মামলা দায়ের করা হয়েছে আরও ১ টি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
উল্লেখ্য, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হক সরকার ও বর্তমান চেয়ারম্যান তাজুল ইসলামের সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। এরইমধ্যে গত শনিবার সকালে দুই পক্ষের সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। তিনদিন ধরে দফায় দফায় চলতে থাকে সংঘর্ষ। জনের বিরুদ্ধে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে পুলিশ টিয়ার সেল, রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্যানেড ও শটগানের গুলি ছুড়ে। এতে ককটেলের স্প্রিন্টারে আহত হয় রায়পুরা থানার ওসি আজহারুল ইসলাম ২ এস.আই সহ ৫০ জন। হামলাকারীরা অর্ধশতাধিক বাড়ি-ঘরে ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগ করে। সর্বশেষ সোমবার সকালে দুইপক্ষ পুনরায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হুমায়ন কবিরের উপস্থিতিতে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে। এ সময় উত্তেজিত গ্রামবাসী পুলিশের ওপর ককটেল ও টেঁটা নিক্ষেপ করেন। এ সময় পুলিশ ও গ্রামবাসী ত্রিমুখী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এই দাঙ্গায় টেটাবিদ্ধ ও গুলিতে ৪ জনের মৃত্য হয়।
নিহতদের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে তাদেও পরিবারের কাছে হস্তান্তও করা হয়েছে।
তৌহিদুর রহমান, নরসিংদী-১৫/১১/১৬ইং
No comments:
Post a Comment