Monday, October 31, 2016

নরসিংদীতে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে পৌরসভার প্রয়াত মেয়র লোকমান হোসেন এর ৫ম মুত্যুবার্ষিকী

নরসিংদীতে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে
পৌরসভার প্রয়াত মেয়র লোকমান হোসেন এর ৫ম মুত্যুবার্ষিকী


তৌহিদুর রহমান,নরসিংদী : নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে নরসিংদীর জনপ্রিয় পৌর মেয়র লোকমান হোসেন এর ৫ম মুত্যুবার্ষিকী। মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ৫ দিন ব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করেছে জনবন্ধু লোকমান হোসেন ফাউন্ডেশন। কবর জিয়ারত, দোয়া মাহফিল, গনভোজ, বিনামূল্যে রক্তদান, বিনামূলে চক্ষু চিকিৎসা সেবা, খুনিদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন, আলোচনা সভা ও স্বরণ সভার আয়োজ করা হয়েছে। জনবন্ধু লোকমান হোসেন ফাউন্ডেশন, শহর, থানা ও জেলা আওয়ামিলীগ এই কর্মসূটি পালন করবে। আজ কর্মসূচির প্রথম দিনে প্রয়াত মেয়র লোকমান হোসেনের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ পরিবারের সদস্য ও সর্বস্তরের মানুষ। নরসিংদীর বিভিন্ন স্থানে আয়োজন করা হয়েছে দোয়া মাহফিল ও গনভোজের। 
২০১১ সালের ১ নভেম্বর শহরের জেলা আওয়ামী লীগের অস্থায়ী কার্যালয়ে প্রবেশ করে প্রকাশ্যে গুলি কওে হত্যা করা হয় লোকমান হোসেন কে। লোকমান হোসেনের মৃত্যুতে শোকে স্তব্দ হয়ে যায় নরসিংদীবাসী। এই হত্যাকন্ডে আলোড়ন উঠে সারা দেশে। শোক সহ্য করতে না পেরে রেলে আগুন, সার্কিট হাউস ও রেল স্টেশনে ভাংচুর করে লোকমান হোসেনের ভক্তরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করতে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে হস্তক্ষেপ করতে হয়। লাখ লাখ মানুষ অংশ নেয় লোকমান হোসেনের জানাজায়। বিচারের দাবিতে ফুসে উঠে নরসিংদীবাসী। ৭ কিলোমিটার লম্বা মানববন্ধন করা হয়। খুনের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠে তৎকালিন ডাক ও টেলি যোগাযোগ মন্ত্রি ও রায়পুরার সংসদ সদস্য রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু ও তার ভাই সালাউদ্দিন আহমেদ বাচ্চুর বিরুদ্ধে। হত্যাকান্ডের দুই দিন পর লোকমান হোসেনের ছোট ভাই বর্তমান পৌর মেয়র কামরুজ্জামান কামরুল বাদী হয়ে রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর ভাই সালাউদ্দিন আহমেদ বাচ্চুকে প্রধান আসামি করে ১৪ জনের বিরুদ্ধে নরসিংদী সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। বিদেশে পলাতক মামলার অন্যতম আসামি মোবারক হোসেন মোবা ছাড়া গ্রেফতার হয় এজাহারভুক্ত সব আসামী। তারা এখন জামিনে মুক্ত রয়েছেন। কিলিং মিশনে সরাসরি অংশ নেয়া কিলার শরীফ অস্ত্রসহ গ্রেফতার হয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। হত্যাকন্ডের ৮ মাস পর নরসিংদী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন, তৎকালীন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ মন্ডল। এজাহারভুক্ত ১৪ জন আসামির মধ্যে প্রধান আসামিসহ ১১ আসামিকে বাদ দিয়ে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। এজাহারভুক্ত আসামিদের বাদ দেওয়ায় অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নারাজি আবেদন করেন বাদী। শুনানী শেষে আদালত উক্ত নারাজি আবেদন খারিজ করে দেন। পরে বাদী জেলা জজ আদালতে রিভিউ পিটিশন দাখিল করলে তাও খারিজ করে দেয়া হয়। পওে উচ্চ আদালতে স্টে-পিটিশন দায়ের করেন মামলার বাদী মেয়র কামরুজ্জামান কামরুল। উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ এর ফলে থমকে আছে চাঞ্চল্যকর লোকমান হত্যা মামলার বিচারকাজ। লোকমান হত্যা মামলার বিষয়ে নরসিংদী জজকোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর মো. ফজলুর রহমান জানান, পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে বাদীপক্ষ থেকে উচ্চ আদালতে নারাজি আবেদন জানানো হয়েছে। বাদীপক্ষের সহযোগিতা ও বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশনা পেলে দ্রুত এই হত্যা মামলার বিচারকাজ সম্পন্ন করা যাবে বলে জানান তিনি।


তৌহিদুর রহমান,নরসিংদী।
১ নবেম্বর ২০১৬ 

No comments:

Post a Comment