নরসিংদীতে অভিনব উপায়ে ৭ মাসের শিশু অপহরণ
পুলিশের ঐকান্তিক চেষ্টায় জীবিত উদ্ধার

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নরসিংদী শহরের চৌয়ালা এলাকার আলমগীর হোসেন এর বাড়িতে ভাড়া থাকতো রাকিবুল হাসান রানা ও তার স্ত্রী। রাকিবুল স্থানীয় একটি পাওয়াললুমে কাজ করতো। গত ২৮ তারিখ বাড়িওয়ালার স্ত্রীর কাছ থেকে কোলে নিয়ে ঘুড়ানোর কথা বলে বাসা থেকে বের হবার পর স্বামী স্ত্রী কেউ বাসায় ফেরেনি। এসময় উদ্বিগ্ন বাবা মা রাকিবুলে ঘরে তল্লাশী চালায়। এসময় রাকিবুলের বিছানার বালিশের নিচ হতে একটি চিরকুট পাওয়া যায়। যার মধ্যে শিশুটিকে অপহরণের কথা বলা হয় ও ৯ সংখ্যার একটি মোবাইল নাম্বার দেওয়া হয়। বাকি দুই সংখ্যা বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর জন্য দেয়া হবে বলে উল্লেখ করা হয়। পরবর্তীতে অপহরণকারীরা শিশুটির বাবার কাছে মোবাইলে ফোন করে শিশুটিকে অপহরণ করা হয়েছে এবং তাকে ফেরত পেতে হলে ১ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে বলে জানায়। বিকাশের মাধ্যমে ৪০ হাজার টাকা পাঠানো হয়, কিন্তু শিশুটিকে ফেরত দিতে অপরাগতা দেখায় অপহরণকারীরা। পরে শিশুটির পরিবার রাকিবুল হাসান রানা ও তাঁর স্ত্রী মোসা. ছাবিনা আক্তারকে আসামী করে নরসিংদী সদর মডেল থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি জেলা পুলিশ সুপার আমেনা বেগম কে অবহিত করা হয়। উনার বিশেষ নির্দেশে সদর মডেল থানার ইন্সপেক্টর মোজাফফর হোসেন ও উপ-পরিদর্শক জাকারিয়া হোসেন পুলিশ সদর দফতরের বিশেষ ইউনিটের সহযোগীতায় টানা ২ দিন অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। তথ্য প্রযুক্তির সহযোগীতায় মোবাইল কল ও বিকাশ একাউন্ট এর অবস্থান নির্ণয় করে ঢাকা, ময়মনসিংহ ও গাজীপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। শুক্রবার রাতে গাজীপুরের জয়দেবপুর থানার বোর্ডবাজার ডেকেরচালা এলাকার একটি ভাড়া বাড়ি থেকে অপহৃত শিশু তোহাকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় এজাহারভুক্ত অপহরণকারী ছাবিনা আক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার আমেনা বেগম (বিপিএম) বলেন, ঈদের ব্যাস্তার মধ্যে খুব সুকৌশলে অপহরণের ঘটনা ঘটায় চক্রটি। শিশুটির জীবনের কথা চিন্তা করে সর্বোচ্চ চেষ্টা নিয়ে কাজ করে পুলিশ। টানা অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। এ অভিযানে বিশেষ সহযোগীতা করেছে পুলিশ সদর দপ্তরের বিশেষ ইউনিট। সদর দফতরের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার নুরে আলম(বিপিএম) ও রাকিবুল হাসান কে ধন্যবাদ জানান তিনি। উদ্ধারকৃত শিশুকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) হাসিবুল আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. শফিউর রহমান, নরসিংদী সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা উপস্থিত ছিলেন।
No comments:
Post a Comment