নরসিংদীর রায়পুরার বাশগাড়ির টেটা যুদ্ধের
প্রধান ইন্ধনদাতা শাহেদ সরকার গ্রেফতার

পুলিশ ও ঘটনা সূত্রে জানা যায়, বাশগাড়িতে আধিপত্য বিস্তার কে কেন্দ্র করে ইউনিয়ন আওয়ামিলীগের সভাপতি শাহেদ সরকার ও বর্তমান চেয়ারম্যান সিরাজুল হক এর মধ্যে দ্বন্ধ চলে আসছিল। এর ফলে এই দুই গ্রুপের সমর্থকদের মাধ্যে টেটা যুদ্ধ শুরু হয়। নির্বাচনের সময় এই দুই গ্রুপের টেটাযুদ্ধে ১ ব্যাক্তি নিহত হয়। এ্ ঘটনার পর এলাকা থেকে দুরে সরে আসে শাহেদ সরকারের সমর্থকরা।
গত এপ্রিলে বাশিগাড়িতে অবস্থান নেয়ার জন্য ব্যাপক রণ প্রস্তুতি নিয়ে সিরাজুল হকের সমর্থকদের সাথে যুদ্ধে নামে। এরপর কয়েক দফা সংঘর্ষে নিহত হয় ৬ জন। এত প্রানহানির পরও ক্ষান্ত হয়নি ক্ষমতালিপ্সুরা। অব্যাহত সংঘর্ষে আতংকের জনপদে পরিণত হয় বাশগাড়ি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ব্যাপক অভিযান চালায় সেখানে। কিন্তু এলাকাটি দূর্গম হওয়ায় তেমন সুবিধা করতে পারেনি পুলিশ। সংঘর্ষ ও হত্যার ঘটনায় রায়পুরা থানায় প্রায় ৪১ টি মামলা হয়। পুলিশ এসব মামলার আসামিদের ধরতে গেলে ব্যাপক বাধার মুখে পড়ে। এসব মামলার আসামীদেরকে গ্রেফতার করার জন্য রায়পুরা থানা পুলিশ এলাকায় অভিযান চালাতে গেলে সাহেদ সরকারের লাঠিয়ালদের হাতে সংঘর্ষ ঘটে। পুলিশ সাহেদ সরকারের লাঠিয়াল সর্দার রূপ মিয়া মেম্বার, আজিজুল, জাকির ও হাবিবুর সহ ৯ জনকে গ্রেফতার করার পর সাহেদ সরকারের লাঠিয়ালরা পুলিশের উপর পাল্টা আক্রমণ চালায়। পুলিশ আসামীদেরকে নিয়ে বাঁশগাড়ী পুলিশ ফাঁড়িতে আশ্রয় নিলে সাহেদ সরকারের লাঠিয়ালরা সেখানে হামলা চালিয়ে কয়েকজন আসামী ও ৩ পুলিশ সদস্যকে অস্ত্রসহ অপহরন করে। পরে গভীর রাতে জেলা পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের উদ্ধার করে। পরিস্থিতি শান্ত করতে সাংসদ রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু শালিস বৈঠক করে শাহেদ সরকারকে ৭ লাখ এবং চেয়ারম্যান সিরাজুল হককে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করে আপোষ মিমাংসা করে দেন। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে মিাংসা হওয়া পরেও শাহেদ সরকার তার আগ্রাসী অবস্থান ধরে রাখে। যার ফলে আবারও সেখানে দাঙ্গা হাঙ্গামা শুরু হওয়ার পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এই নিয়ে যখন পুরো জেলা জুড়ে আলোচনা শুরু হয়, তখনই জেলা গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেফতার করে টেটা যুদ্ধের খলনায়ক শাহেদ সরকার কে।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা সাইদুর রহমান জানান. জেলা পুলিশ সুপারের বিশেষ নির্দেশনায় বহু মামলার আসামী সরকার হাফিজুর রহমান ওরফে শাহেদ সরকার কে নরসিংদীর বাদুয়ারচর থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর তাকে রায়পুরা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপার আমেনা বেগম জানান, বাশগাড়ির বিভিন্ন সময় ঘটে যাওয়া রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, হত্যা, বোমাবাজি, লুট, পুলিশের উপর হামলাসহ বহু মামলার আসামী শাহেদ সরকার। তাকে গ্রেফতার করতে পুলিশ চেষ্টা করে আসছে। এর ধারাবাহিকতায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেছে।
সোমবার দুপুওে তাকে আদালতে তোলা হলে পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত তার ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
#
তৌহিদুর রহমান, নরসিংদী
৪/৭/১৭ইং
No comments:
Post a Comment