নরসিংদী পুলিশ সুপারের উদ্যোগে
চর করিমপুরের দুই বিবদমান পক্ষের মিলন মেলা
হাজার খানেক টেটা জমা দিয়ে টেটা যুদ্ধ না করার অঙ্গিকার
তৌহিদুর রহমান: নরসিংদী পুলিশ সুপারের উদ্যোগে নরসিংদী সদর উপজেলার চর করিমপুরের বিবদমান দুই গ্রুপের টেটা যুদ্ধ বন্ধ করতে এক মিলন মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মিলন মেলায় দুই পক্ষের নেতারা আর কখনো টেটা যুদ্ধ করবে না বলে অঙ্গিকার করেন। এসময় প্রায় হাজার খানেক ধারালো টেটা পুলিশ সুপারের কাছে সমর্পন করা হয়। বিপুল সংখ্যাক লোকের উপস্থিতিতে দুই পক্ষের নেতাগণ আর কখনো টেটা যুদ্ধ করবে না বলে অঙ্গিকার কওে ন। সেই সাথে উপস্থিত করিমপুরের সর্বস্তরের লোকজন আর কখনো টোঁযুদ্ধ করবে না বলে দুই হাত তুলে অঙ্গিকার করেন।
আজ বৃহস্পাতবার করিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে বহুল প্রত্যাশিত এই মিলন মেলা অনুষ্ঠিত হয়। মিলন মেলা উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। মিলন মেলা ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্তিত ছিলেন নরসিংদীর পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুন (বিপিএম,পিপিএম)। করিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়রম্যান হারিছ মিয়ার সভাপতিতে ও সদর মডেল থানার অপারেশন অফিসার মোজাফফর হোসেন এর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রশাসন জাকির হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল শাহরিয়ার আলম, নরসিংদী সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কমকর্তা মো: সৈয়দুজ্জামান। এলাকাবাসীর পক্ষে বক্তব্য রাখেন সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শফিউল আলম বাচ্চু মাষ্টার, এলাকার সম্মানিত ব্যাক্তি জসিম উদ্দিন মাষ্টার। আলোচনা সভায় টেটা যুদ্ধের দুই পক্ষের নেতা মমিন মিয়া ও জাহাংগীর মিয়া আর কখনো টেটা রযুদ্ধে জড়াবেনা বলে অঙ্গিকার করে। মমিন মিয়া নরসিংদী চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক পদে আছেন ও যুবলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। অপর দিকে জাহাঙ্গীর মিয়া করিমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক। এই দুই নেতার মধে আধিপত্য বিস্তার কে কেন্দ্র করে বহু দিন ধরে টেটা যুদ্ধ চলে আসছিল। তারা এলাকার বাহিরে থেকে বিরোধ কে উস্কে দিয়ে মরণপন যুদ্ধের সৃষ্টি করতো। এর আগে করিমপুরের শুটকিকান্দিতে এক অনুষ্ঠানে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও সদর আসনের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম হীরু (বীর প্রতিক) টেটা যুদ্ধ না করতে নেতাদের কে শপথ করান। কিন্তু শপথ করানের পরদিনই শুরু হয় টেটা যুদ্ধ। আহত হয় প্রায় ৪০ জন। এর মধ্যে একজন ঢাকা মেডিকেলে আশংকাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছে। এমন অবস্থায় এ গুরুতর সমস্যা নিরসনে কার্যক্রম শুরু করেন পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুন। পুলিশ সুপারে বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে দুই পক্ষই এলাকার বৃহৎ স্বার্থে নিজেদের মধ্যেকার বিরোধ নিষ্পত্তি করবে বলে আগ্রহ প্রকাশ করে। আজ বৃহস্পতিবার সকালেই করিমপুর বাসীর দীর্ঘ দিনের এ সমস্যার সমাধান হলো। এলাকাবাসীরাও দুই হাত তুলে অঙ্গিকার করেচেন তারা কখনো টেটা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করবে না।
পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুন করিমপুরবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন,
কতিপয় নেতাদের ইন্ধনে যে টেটাযুদ্ধ হয় তাতে বেশীরভাগ ক্ষেত্রে সাধারন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। হোতারা নিজেদের গায়ে আচড় লাগতে দেয় না। নিজেরা নিজেদের মধ্যে যুদ্ধ করলে শুধুই ক্ষতি। এ থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। পাশের বাড়ির লোক ভাল থাকলে আপনি ভাল থাকবেন। পাশের বাড়ির লোক খারাপ হলে তার কারনে আপনিও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। নিজেকে নিরাপদ রাখতে পাশের মানুষ টিকেও নিরাপদ রাখতে হবে। শুধু আমি ভাল থাকতে চাইলেই ভাল থাকা যায় না। সবাইকে নিছেন ভাল থাকতে হয়। আপনারা সকল বিবেদ ভুলে আজ ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন। টেটা যুদ্ধ না করার যে প্রতিজ্ঞা করেছেন তা যেন বজায় থাকে সে আহবান করছি।#
১৭/৫/১৮ইং
No comments:
Post a Comment