Friday, February 3, 2017

নরসিংদী ডেন্টাল এন্ড জেনারেল হাসপাতালে ভুল চিকিতসায় রোগির মৃত্যু হাসপাতালের পরিচালক আটক

নরসিংদী ডেন্টাল এন্ড জেনারেল হাসপাতালে 
ভুল চিকিতসায় রোগির মৃত্যু
হাসপাতালের পরিচালক আটক

তৌহিদুর রহমান, নরসিংদী :- নরসিংদী ডেন্টাল এন্ড জেনারেল হাসপাতালে ভুল চিকিতসায় এক রোগির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। রোগীর মৃত্যুর পর তাদের তিন স্বজনকে হাসপাতালের একটি কক্ষে আটকে রাখে ও মারধর করা হয়। মারধরে নিহত রোগীর ছোট ভাই গুরুতর আহত হয়। এই ঘটনায় ক্ষুব্দ হয়ে রোগীর স্বজনরা হাসপাতালে ভাঙ্গচুর চালায়। শুক্রবার বিকেলে পৌর শহরের ভেলানগরস্থ নরসিংদী জেনারেল ও ডেন্টাল হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। নিহতের লাশ সুরতাহাল করে ময়না তদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করা হয়েছে। নিহত রোগীর নাম আছমা বেগম(২০) সে গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া এলাকার আব্দুর রহিমের স্ত্রী ও রায়পুরা উপজেলার হাটুভাংঙ্গার আ: রহমানের কন্যা । এ ঘটনায় হাসপাতালের পরিচালক রহমুতল্লাহসহ দুইজন কে আটক করেছে পুলিশ। 

নিহতের স্বামী ও ঘটনা সূত্রে জানা যায়,
গত ১ ফেব্র“য়ারী বুধবার বিকেলে ডা: কাজী নাজমার তত্ববধানে নিহত আছমা বেগমের সিজারিয়ান অপারেশন এর মাধ্যমে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। বৃহস্পতিবার রাত থেকে উচ্চ রক্তচাপসহ নানা সমস্যার সম্মুখিন হয়ে অবস্থার অবনতি হতে থাকে। পরিবারের লোকজন তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্যত্র নিতে চাইলে তাতে বাধা দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার দুপুরে রোগী খাবার খায়। এরপর পরই তার শ্বাষকস্ট হতে থাকে। এসময় তাকে একটি ইনজেশন পুশ করে কর্তব্যরত নার্স। এর কিছৃক্ষন পর তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানোর জন্য এম্বুলেন্স ডাকে হাসপাতাল কর্তপক্ষ। এর মধ্যেই মৃত্যু হয় আছমা বেগমের। এসময় রোগীর স্বজনারা হাসপাতালের লোকজনের কাছে বারবার রোগীর ব্যবস্থাপত্র দেখতে চাইলেও রাজী হয়নি তারা। এক পর্যায়ে হাসপাতালের পিয়ন ব্যবস্থাপত্র ফটোকপি করার কথা বলে বাহিরে চলে যায়। তারপর সে আর ফিরে আসেনি। এতে রোগীর স্বজনরা রাগারাগী করলে তাদের কে একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়। পরে রোগীর লোকজন এসে তাদের উদ্ধার করে ও হাসপাতালের কয়েকটি কক্ষের কাচ ভাংচুর চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এসময় পুলিশ রোগীর ব্যবস্থা উদ্ধার করতে হাসপাতালে তল্লাশী করলেও কোথাও তা খুজে পাওয়া যায়নি। এমন কি হাসপাতালের ফার্মেসী থেকে ওষুধ সরবারহের রেজিষ্টার খুজে পাওয়া যায়নি। তবে রোগীর ভর্তি রেজিষ্টারে ডাঃ কাজী নাজমার অধীনে তার ভর্তির রেকর্ড রয়েছে। এসময় হাসপাতালের পরিচালক রহমুতল্লাহসহ দুইজন কে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনার পর থেকে হাসপাতালের সকল লোকজন অন্যান্য ভর্তি রেখেই পালিয়ে যায়। পরে পুলিশের সহায়তায় তাদের কে অন্য হাসপাতালে প্রেরন করা হয়।
সদর মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার বিল্লার হোসেন জানান, অবহেলার অভিযোগে রোগীর মৃত্যু হয়েছে অভিযোগে হাসপাতালে ভাংচুর হচ্ছে এমন খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রেনে আনে। নিহতের লাশের সুরতাহাল করে পোষ্টমার্টেম এর জন্য প্রেরন করা হয়েছে। এ বিষয়ে রোগীর স্বজনদের অভিযোগের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্তা নেওয়া হবে।  
এ বিষয়ে কথা বলতে হাসপাতালের কারও সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। বিভিন্ন সূত্রে থেকে জানা যায়, এই হাসপাতালে কোন ধরনের প্রশিক্ষন ও সনদ ছাড়াই নার্স নিয়োগ দেয়া হয়। এছাড়া সংশ্লিষ্ট ডাক্তার অপারেশনের আগে রোগীর শারারিক অবস্থা ভালভাবে যাচাই করেননা। অপারেশনরে পর রোগীর আর খবর নেন না। যার ফলে রোগীরা সঠিক চিকিৎসা পায়না। ডা: কাজী নাজমা দারুণ ব্যাস্ততা দেখিয়ে রোগীর স্বজনদের সাথে ভাল করে কথাও বলেননা। এ ব্যপারে হাসপাতালের লোকজন কথা বলতে রাজি হয়নি। সচেতন মহল এই রোগীর মৃত্যুর সঠিক কারন উদঘাটন ও এর সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানিয়েছেন। যেন ভবিষ্যতে অবহেলার দরুন কোন রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ না উঠে। 

#
তৌহিদুর রহমান, নরসিংদী
৩/২/১৭ইং


No comments:

Post a Comment