জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বর্ষীয়ান নেতা এডভোকেট
আসাদুজ্জামানের জানাজা ও দাফন সম্পন্ন
নেতা-কর্মী ও সাধারন মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদন
আজ বুধবার ভোর ৫ টায় শ্বাসকষ্ট ও হৃদরোগ জনিত কারণে ইন্তেকাল করেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। ১৯৪৫ সালের ৭ মার্চ নরসিংদী সদর উপজেলার নজরপুর ইউনিয়নের কালাই গোবিন্দপুর গ্রামে এক সভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতা মরহুম নওয়াব আলী গাজী এবং মাতা মোসাম্মৎ হায়াতুন্নেছা।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ভোর রাত সাড়ে ৪ টায় তিনি বুকে প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব করেন। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে প্রথমে নরসিংদী সদর হাসপাতালে ও পরে সেখান থেকে ঢাকা এ্যাপলো হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে সারা নরসিংদীতে শোকের ছায়া নেমে আসে। দলীয় নেতাকর্মীসহ সকল শ্রেণী পেশার মানুষ তার বাড়ীতে তাকে এক নজর দেখার জন্য ভীড় জমায়।
তাঁর মৃত্যুতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের শোক জানিয়েছেন।
এড. আসাদোজ্জামানের মৃত্যুতে নরসিংদীর আইনজীবী সমিতির সদস্যরা তার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে কর্মবিরতি পালন করে। আইনজীবী সহ দলীয় নেতাকর্মীরা কালোব্যাজ ধারণ করে।
এর আগে মরহুমের লাশ আওয়ামী লীগের জেলা কার্যালয়ের সামনে রাখা হলে সেখানে দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকরা তার প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। পরে লাশ নিয়ে যায় তার কর্মস্থল নরসিংদী জেলা পরিষদ ভবনে। সেখানে জেলা পরিষদের কর্মকর্তা কর্মচারীরা তার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। পরে সেখান থেকে জেলা আইনজীবি সমিতির কার্যালয়ে। সেখানে আইনজীবিগন তাকে ফুলেল শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। বিকেলে বাদ আছর তার লাশ নিয়ে যাওয়া হয় নরসিংদী মোছলেহ উদ্দিন ভূইয়া স্টেডিয়ামে। জানাজা শেষে আসাদোজ্জামানের লাশ নরসিংদী শহরের রাঙ্গামাটিস্থ ঈদগাহ গোরস্থানে দ্বিতীয় নামাজে জানাজা শেষে দাফন করা হয়।
এডভোকেট আসাদোজ্জামান তার কর্মজীবনের শুরুতে সোনারগাঁও কলেজে অধ্যাপনায় যোগদান করেছিলেন। পরবর্তী পর্যায়ে নিজ গ্রামে মুতিউল্লাহ ভূইয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। এরপর থেকে তিনি আইন পেশা শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি ১৯৮৫ সালে নরসিংদী বার কাউন্সিলের প্রথম সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হন। এছাড়া তিনি নরসিংদী বার কাউন্সিলের ২ বার সভাপতি পদে নির্বাচিত হন। ১৯৯৫ সাল থেকে দীর্ঘ ২৩ বছর যাবৎ মানবাধিকার সংস্থা, নরসিংদী জেলার সভাপতি পদে সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। ছাত্র জীবন থেকে রাজনীতির সংগে যুক্ত হয়ে ছাত্র ইউনিয়নের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৮৩সাল থেকে নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুসলেহ উদ্দিন ভূইয়ার মৃত্যুর পর তিনি ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও পরে সভাপতি নির্বাচিত হন এবং দীর্ঘ ২০ বছর যাবৎ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
২০১১ সালের ২০ ডিসেম্বর নরসিংদী জেলা পরিষদ প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে ৫ বছর আন্তরিকতা, নিষ্ঠা, সততা ও দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। গত ২৮ ডিসেম্বর ২০১৬ প্রথম জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হন।
তৌহিদুর রহমান, নরসিংদী
১/২/১৭ ইং
No comments:
Post a Comment