নরসিংদী জজ কোর্ট ও কালেক্টরেট ভবন এলাকা থেকে বাদীকে অপহরণের চেষ্টা মাইক্রোবাস আটক করেছে পুলিশ

মামলার বাদী শিপলু’র আত্মীয়-স্বজন ঘটনা সম্পর্কে জানিয়েছে, বছরখানেক পূর্বে নরসিংদী সদর উপজেলার দক্ষিণ পুরানপাড়া গ্রামে বকুল উদ্দিন ভূইয়ার পুত্র মোশারফ হোসেন শিপলু একটি ড্রেজার মেশিন ক্রয় করে বালু উত্তোলনের ব্যবসায় নিয়োজিত হয়। এই ড্রেজারটি কিনার সময় নাগরিয়াকান্দী মহলার মৃত শফিকুল ইসলামের পুত্র শহিদুল ইসলামের নিকট থেকে এক লাখ টাকা ধার নেয়। ধারের শর্ত ছিল বালু বিক্রি করে টাকা পরিশোধ করে দিবে। কিন্তু শিপলু সঠিক সময়ে টাকা পরিশোধ করতে পারেনি। গত বর্ষার সময় ড্রেজারটি আড়িয়ালখাঁ নদে বালু উত্তোলনকালে শহীদুল, শিপলুকে ডেকে নিয়ে শহরের ইসলাম প্লাজা নামে একটি মার্কেটের ভিতর আটকে রেখে তার উপর শারীরিক নির্যাতন চালায়। পরে সে ঘটনাক্রমে মুক্তি লাভ করে। এর কিছুদিন পর শহীদুল’র নেতৃত্বে ৪/৫টি স্পীডবোট নিয়ে ২০/২৫ জনের একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী আড়িয়ালখাঁ নদে গিয়ে ফাঁকা গুলিবর্ষণ করতে থাকে। এতে ড্রেজার চালক ও ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বরত লোকজন ড্রেজার ছেড়ে পালিয়ে যায়। এসময় আড়িয়ালখা নদ ও পার্শবর্তী এলাকায় ব্যাপক আতংকের সৃষ্টি হয়। লোকজন আড়িয়ালখাঁ সেতুর উপর উঠে এ দৃশ্য দেখার সময় সন্ত্রাসীরা পূনরায় গুলিবর্ষণ করলে লোকজন সেতু ছেড়ে পালিয়ে যায়। পরে সন্ত্রাসীরা ড্রেজারটি চালিয়ে বাউলবাড়ীর ঘাটের দিকে নিয়ে যায়। এই ঘটনার পর শিপলু, শহীদুলসহ ৭/৮ জনকে আসামী করে আদালতে একটি মামলা দায়ের করে। রায়পুরা আমলী আদালতের মামলা নং সিআর ৩৩৯/১৬। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি তদন্ত করার জন্য পিবিআইকে দায়িত্ব অর্পণ করে। পিবিআই মামলাটির উপর তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার পর গতকাল সোমবার শহীদুলসহ অন্যান্য আসামীরা আদালতে হাজিরা দিতে যায়। ওই সময় আসামীরা মামলার বাদী শিপলুকে অপহরণের চেষ্টা চালাতে পারে। এ সময় অবস্থা টের পেয়ে বাদী শিপলু মোবাইল ফোনের বাড়ী জানায়। খবর পেয়ে তার বাড়ি থেকে থেকে ৫/৭ জন লোক আদালতের গেইটে গিয়ে জমায়েত হয়। এরপর শিপলু সাহস করে আদালতের গেইট থেকে বেরিয়ে কয়েক কদম সামনে আসার সাথে সাথেই ৫/৬ জনের একটি অস্ত্রধারী দল তাকে ধরে মারপিট শুরু করে। এতে শিপলুও তার প্রাণ বাঁচানোর জন্য তাদের সাথে ধস্তাধস্তিতে লিপ্ত হয়। এ সময় সন্ত্রাসীরা তাকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে অপেক্ষমান মাইক্রোবাসটিতে উঠানোর চেষ্টা করে। এসময় শত শত মানুষ আদালত প্রাঙ্গনে জড়ো হয়ে এই দৃশ্য প্রত্যক্ষ করতে থাকে। এ সময় কোর্ট মসজিদে মুসল্লীরা যোহরের সুন্নত নামাজ পড়ছিল। হৈ-হুলোড় শুনে মুসলীরা মসজিদ থেকে উকি দিয়ে এই ঘটনা দেখে ২/৩ জন মুসল্লী এগিয়ে এগিয়ে এসে মাইক্রোবাসটির সামনে দাড়িয়ে যুবকটিকে বাঁচানোর চেষ্টা করে। খবর পেয়ে নরসিংদী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মাইক্রোবাসটি থানায় নিয়ে যায়। মারাত্মক রক্তাক্ত আহত অবস্থায় শিপলু ও তার সহযোগিকে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এ ব্যাপারে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় কোন মামলা হয়নি।
শিপলুর বড় ভাই বাবলু সাংবাদিকদের জানিয়েছে, থানায় মামলা করতে যাওয়ার পর পুলিশ মামলা নিচ্ছে না। তবে পুলিশ জানিয়েছে দু’পক্ষই থানায় মামলা নিয়ে এসেছে।
লক্ষন বর্মন, নরসিংদী:
No comments:
Post a Comment