নরসিংদীতে পরিত্যাক্ত পুরনো পত্রিকা ও বইয়ের কাগজ দিয়ে খোলা খাবার পরিবেশন
মারাত্নক স্বাস্থ্য ঝুকি, সচেতনতা জরুরী
তৌহিদুর রহমান, নরসিংদী: সকালের নাস্তা খেতে কম বেশী সবাই যাই কাছের রেষ্টুরেন্ট গুলিতে। বেশিরভাগ রেষ্টুরেন্ট গুলিতেই নাস্তার পরোটা, ডিম, লুচি, সিঙ্গারা, পুড়ি পরিবেশন করা হয় পত্রিকার কাগজ দিয়ে। শুধু এই গুলি নয় মুখরোচক ঝাল মুড়ি, ছোলা, অচাড়, জিলাপিসহ বিভিন্ন খোলাজাতীয় খাবার পরিবেশনে অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে পড়েছে এখন পুরনো পত্রিকা ও বইয়ের কাগজ। কোন কিছু না ভেবেই বিক্রেতা যেমন পত্রিকা ও পুরনো বইয়ের কাগজ দিয়ে পরিবেশন করছেন খাবার ঠিক তেমনি আমরাও অসচেতন ভাবে তাই নিচ্ছি। অথচ একটু চিন্তা করলেই বুঝা যাবে কি ভুল আমরা করছি।
খবরের কাগজ ছাপা হয় শুধু মাত্র পাঠকদের পড়ার জন্য। সেখানে খাবার বিক্রী করার মতো কোন সুযোগ সুবিধা দিয়ে পত্রিকা ছাপা হয়না। মেশিনের মাধ্যমে কালি ব্যবহার করে মুদ্রণ করা হয় পত্রিকা। সেখান থেকে নানা হাত ঘুরে বিভিন্ন ট্রান্সপোর্টের মাধ্যমে তা ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশের পাঠকের কাছে। অফিসের টেবিলে, বিছানায়, খোলা মাঠে ঘাসের উপর, গাড়ির সিটে যার সুবিধামতো রেখেই পত্রিকা পড়েন পাঠকরা। প্রতিদিনের পত্রিকা জমা রাখা হয় ঘরের কোন অব্যবহৃত জায়গায়। এছাড়া অপ্রয়োজনীয় বই গুলিও কেজি দরে বিক্রীর জন্য জমা রাখা হয়। যেখানে ইদুর আরশোলার যাতায়াত নিত্ত-নৈমত্তিক ব্যাপার। সেখানে অনেক দিনের পত্রিকা জমা হলে তা বিক্রী করা হয় হকারের কাছে। ধুলো পড়া মেঝের উপর রেখেই তা এক সাথে বেধেই নিয়ে যায় তারা। সেখান থেকে পাইকারী দোকানদারের কাছে বিক্রী করে তারা। সেখানে ধুলোময় জায়গায় দীর্ঘ দিন ধরে রাখা হয়। যার উপর দিয়ে ইদুর, তেলাপোকা, আরশোলা বাসা বাধে। মাকড়সার জাল, বিড়ালের মলমূত্রের সংস্পর্শও থাকে। সেখান থেকে বিভিন্ন হাটবাজারে যায় এই পুড়নো পত্রিকা ও বই। যা দিয়ে অবলীলায় বিক্রী করা হয় বিভিন্ন খাবার। সবচাইতে উদ্যেগজনক বিষয় হলো ছোট শিশুদের খাবারেও বহুবছর ধরে ব্যবহার হচ্ছে পুরনো পত্রিকা ও কাগজ। নরসিংদী ১০০ শয্যা হাসপাতালের সিনিয়র কলসান্টে আবু জায়েদ জানান, এ ধরনের পুরনো কাগজ দিয়ে খাবার বিক্রি করা স্বাস্থের জন্য মারাতœক ঝুকির কারন। এর ফলে শিশুদের ডায়রিয়া, টাইফয়েড, শ^াষকষ্ট ও লিভারের নান সমস্যা হবে। যেহুতু এই ধরনরে পত্রিকার কাগজ ও বই বিভিন্ন স্থান ও পরিবেশ ও প্রাণীর স্পর্শ পায় সেখানে বহু ধরনের রোগ হবার সম্ভাবনা থাকে। এ বিষয়ে সবার সচেতনতা জরুরী।
নরসিংদী পৌরসভার স্বাস্থ বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. সাজেদুল ইসলাম অপু বলেন। দীর্ঘ দিন ধরেই আমাদের দেশে এই ভাবে পত্রিকার ও বইয়ের কাগজ দিয়ে খাবার বিক্রি করা হচ্ছে। এর খারাপ দিক গুলি সমন্ধে মানুষ অবগত নয়। পৌরসভার পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সচেতনা সৃষ্টি ও এর ব্যবহার বন্ধ করার উদ্যেগ নেয়া হবে।
তৌহিদুর রহমান, নরসিংদী
৩০/৫/১৭ইং