মনোহরদীতে ভন্ড সাধুর প্রতারণা
দুই পরিবারের ৭ জনকে অচেতন করে মালামাল লুট
শান্ত বণিক : মনোহরদীতে ধর্মের দীক্ষার নামে সাধু বেশে এক প্রতারক চালকচর এলাকায় দুই হিন্দু পরিবারের সকলকে অচেতন করে স্বর্ণালঙ্কার, নগদ টাকা পয়সা লুট করে নিয়ে গেছে। গত মঙ্গলবার রাতে খিদিরপুর ইউনিয়নের বীর আহমদপুর মোদক বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। অচেতন ব্যক্তিরা হলো নির্মল চন্দ্র মোদক (৫৫), তার স্ত্রী সবিতা মোদক (৪০), তার তিন মেয়ে আখি মোদক (১৫), শ্রাবন্তী মোদক (১২), তোরা রাণী মোদক (৫), অখিল চন্দ্র মোদক (৫৫), তার স্ত্রী লুনা মোদক (৪০)।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, প্রায় এক মাস ধরে জনৈক সাধু চালাকচর মোদকপাড়ার শ্রী গুরু আশ্রমে মাঝে-মাঝে আসা-যাওয়া করতো। এক পর্যায়ে এলাকাবাসী তার ধর্মীয় কথাবার্তায় আকৃষ্ট হয়ে পড়ে। এলাকার সনাতন ধর্মীয় লোকজন ধর্মীয় গুরু হিসেবে তার কাছ থেকে দীক্ষা গ্রহণ করতে থাকে। বিগত এক সপ্তাহ ধরে মোদক বাড়ির শ্রী গুরু আশ্রমে স্থায়ী ভাবে অবস্থান করে আসছে। তার কাছ থেকে দীক্ষা নেওয়ার জন্য স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন সরল বিশ্বাসে তাকে নিমন্ত্রণ করে একেকদিন একেক বাড়িতে নিয়ে যায়। গত মঙ্গলবার রাতে নির্মল মোদক তার বাড়িতে সাধুকে নিমন্ত্রণ জানায়। সাধু ঐ রাতে নির্মল মোদকের বাড়িতে গিয়ে প্রসাদ তৈরী করে নির্মল মোদক ও প্রতিবেশী অখিল মোদকের পরিবারের সবাইকে তা খেতে দেয়। কিছুক্ষণ পর দুই পরিবারের সকলেই অচেতন হয়ে পড়লে প্রতারক সাধু নির্মল মোদক ও অখিল মোদকের বাড়ি থেকে স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকা-পয়সা নিয়ে পালিয়ে যায়। পরদিন সকালে প্রতিবেশিরা তাদেরকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক অচেতন পাঁচজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। বাকি দুজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বিকাল ৫টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অচেতন কারো জ্ঞান ফেরে নি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা প্রশাসক ডা. মো. শফীকুল আলম বলেন, প্রসাদের সাথে মাত্রারিক্ত ঘুমের ঔষধ ব্যবহার করায় সকলেই অচেতন হতে পারে বলে আমার ধারণা। মনোহরদী থানার ওসি মো. সাইফুল ইসলাম ফরাজী বলেন, প্রতারক সাধু দেয়া প্রসাদ খেয়ে দুই পরিবারের ৭ সদস্য অচেতন হওয়ার সংবাদ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করার জন্য ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরিবারের লোকজন একনো অসুস্থ তারা সুস্থ হলে ঘটনা ভাল করে জানা যাবে।
শান্ত বণিক
১৭/৫/১৬ইং
No comments:
Post a Comment