নরসিংদী পুলিশ সুপার ও পৌর মেয়রের উদ্যোগ
সদর উপজেলার নজরপুরে টেটাযুদ্ধ বন্ধে
বিবদমান সকল পক্ষের টেটা সমর্পণ
তৌহিদুর রহমান: নরসিংদী পুলিশ সুপার ও পৌর মেয়রের উদ্যোগে নরসিংদী সদর উপজেলার চর নজরপুরে আর কোনদিন টেটাযুদ্ধ করবেনা বলে অঙ্গিকার করেছে বিবদমান সকল পক্ষের লোকজন। সেই সাথে তাদের কাছে রক্ষিত টেটা জমা দিয়েছে তারা। আজ রোববার নজরপুর ইউনিয়নের অলিপুরা
বাজারে এক মিলন মেলার মধ্য দিয়ে দীর্ঘ দিনের এ টেটাযুদ্ধ বন্ধে সবাই এক্যবদ্ধ হয়। এই মিলন মেলার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নরসিংদীর পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নরসিংদী পৌরসভার মেয়র কামরুজ্জামান কামরুল। মিলন মেলায় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শাহরিয়ার আলম, সদর৪ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: সৈয়দুজ্জামান, জেলা আওয়ামি লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়ালিউর রহমান আজিম প্রমুখ। মিলন মেলা ও আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন নজরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাদল সরকার ও সঞ্চালনা করেন নরসিংদী সদর মডেল থানার অপারেশন অফিসার মোজাফফর হোসেন।
মিলন মেলায় দুই পক্ষের নেতারা আর কখনো টেটা যুদ্ধ করবে না বলে অঙ্গিকার করেন। এসময় প্রায় হাজার খানেক ধারালো টেটা পুলিশ সুপারের কাছে সমর্পন করা হয়। মোশারফ, আরমান ফকির, কামাল মেম্বার, কুদ্দুস মেম্বার, জলিল ফকির, শাহজাহান মনা, রমজান মেম্বার, সামসু মেম্বার ও মনা মিয়া টেটা যুদ্ধ সৃষ্টিকারী এই নেতারা সদলবলে তাদেও কাছে রক্ষিত টেটা গুলি এক জায়গায় জড়ো করে। বিপুল সংখ্যাক লোকের উপস্থিতিতে পক্ষের সর্দারগণ আর কখনো টেটা যুদ্ধ করবে না বলে অঙ্গিকার করেন। সেই সাথে উপস্থিত নজরপুরের সর্বস্তরের লোকজন আর কখনো টেটাঁযুদ্ধ করবে না বলে দুই হাত তুলে অঙ্গিকার করেন।
পৌর মেয়র কামরুজ্জামন নজরপুরবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, মানুষ কে ভুল বুজিয়ে ঝগড়া বিবাদে মত্ত রেখে নিজেদের স্বার্থ আদায় করাই ইন্দনকারীদের কাজ। টেটা যুদ্ধে আহত হয়ে অনেক পরিবারিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেই সাথে আইনের ফাক গলে বের হতে প্রানান্ত চেষ্টা ও বিভিন্ন দালালের ক্ষপ্পড়ে পড়ে আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়। টেটা যুদ্ধে আহত নিহত ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাক্তি কোন মায়ের সন্তান, স্ত্রীর স্বামী, সন্তানের পিতা। তাদের ভবিষ্যতের দিতে তাকিয়ে টেটাযুদ্ধের মতো নিষ্ঠুরতা বন্ধ করতে সবাইকে আহবান জানান। তিনি আরও বলেন নরসিংদী জেলা কলংকিত করে তুলেছে এই টেটা যুদ্ধ। এখন থেকে যারা টেটা যুদ্ধে ইন্ধন কিংবা অংশগ্রহণ করবেন তাদের বিরুদ্ধে চুড়ান্ত পদক্ষেপ নেয়া হবে।
পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুন (বিপিএম, পিএিম) প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, আমি নরসিংদী আসার পূর্বেই জেনেছি আপনাদের এই টেটাযুদ্ধের কথা। এটা আপনাদের জন্য একটি কলংকিত অধ্যায়। আমি আপনাদের কাছে শান্তির বার্তা নিয়ে এসেছি। সকল ভেদাভেদ ভুলে আপনারা মিলে-মিশে শান্তিতে থাকবেন সেটাই আমরা প্রত্যাশা করি। নরসিংদী পৌরসভার মেয়র ও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে আলোচনা করে আপনারা শান্তিপূর্ণ অবস্থানের জন্য সকল টেটা জমা দেয়ার প্রতিজ্ঞা করেছেন। আজ আপনারা আপনাদেও প্রতিজ্ঞা পূরণ করেছেন। সে জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
এই মিলন মেলার পরও যদি কেউ টেটাযুদ্ধে লিপ্ত হন তবে তাকে শক্ত হাতেই মোকাবেলা করা হবে। শুধুমাত্র মানবিক কারনে আপনাদের কে শেষবারের মতো সুযোগ দেয়া হয়েছে। যেখানে দেশ উন্নতির দিকে ধাবিত হচ্ছে সেখানে এসব নিষ্ঠুরতা চলতে দেয়া হবে না। জেলা পুলিশ অত্যাধুনিক ড্রোন ক্যামেরা দিয়ে দুর থেকেই দেখতে পারবে টেটাযুদ্ধে কারা অংশগ্রহণ করছে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। আপনারা সকল বিবেদ ভুলে আজ ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন। টেটা যুদ্ধ না করার যে প্রতিজ্ঞা করেছেন তা যেন বজায় থাকে সে আহবান করছি।
১০/৬/১৮ইং
No comments:
Post a Comment