Monday, June 4, 2018

জেলা জুড়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

ডিবির এসআই খোকন এর মাদক সম্পৃক্ততা
ও এএসআই সোহেলের জোড়পূর্বক স্বীকারোক্তী আদায় নিয়ে
জেলা জুড়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া




তৌহিদুর রহমান: গত কয়েকদিন ধরে নরসিংদীতে ডিবি পুলিশের এসআই খোকন চন্দ্র সরকার কে নিয়ে ব্যাপক আলোচনা আর সমালোচনার ঝড় উঠেছে। শিবপুর থানায় গ্রেফতারকৃত কালাম নামের এক ব্যাক্তি পুলিশের কাছে স্বীকার করেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই খোকন তাকে ইয়াবা সরবারহ করেন। মনোহরদী-বেলাব আসনের সাংসদের ছেলে সাদী এই ইয়াবার ব্যবসার সাথে জড়িত। এমন খবরে সাড়া পড়ে যায় নরসিংদীসহ সারাদেশে। অপর দিকে গ্রেফতারকৃত কালামের স্ত্রী ও হিমেল নামের এক কলেজ ছাত্রের মা এডভোকেট শিরিন পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করেন এএসআই সোহেল তার ছেলেকে ক্রসফায়ার এর ভয়-ভীতি দেখিয়ে টাকার আদায় করা হয়েছে। তিনি অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন, এএসআই সোহেল তার সামনেই কালাম কে বেড়ধক পিটুনি দেন। এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে পুলিশ সুপার জেলা গোয়েন্দা শাখার উপ-পরিদর্শক খোকন চন্দ্র সরকার, শিবপুর থানার এএসআই সোহেল রানা ও গোয়েন্দা শাখার কনস্টেবল মামুন মিয়াকে পুলিশ লাইনে ক্লোজড করেন।
সারাদেশে যখন মাদক ব্যবসায়ীদের ধরপাকর চলছে ও তাদের সাথে জড়িতদের দমন করা হচ্ছে সেই মূহুর্তে নরসিংদীর এই ঘটনা বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। দীর্ঘ দিন ধরেই জেলায় গোয়েন্দা পুলিশে কর্মরত আছেন এসআই খোকন চন্দ্র সরকার। মাদক, অস্ত্র উদ্ধারের জন্য জেলা জুড়ে বেশ কয়েকবার সেরা হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠায় সাংবাদিক মহল বেশ তৎপড় হয়ে উঠে। সাংবাদিকদের তৎপড়তায় ও ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার মূল রহস্য বের হয়ে আসে। ডিবির এসআই খোকনের সাথে বিবাদ থাকায় তার বিশস্ত সোর্স কালাম কে আটক করা হয়। তারপর তাকে অমানুষিক নির্যাতন করে হাত ভেঙ্গে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে জোড়পূর্বক স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়। তাকে দিয়ে স্বীকার করানো হয় ৩ বারে ৬ হাজার পিস ইয়াবা এসআই খোকন তাকে সরবারহ করে। এ ব্যবসার সাথে মনোহরদী-বেলাবরের সংসদ সদস্য হুমায়ন এর ছেলে জড়িত। কালামের স্ত্রী সোমা বেগম এর আদালতে দায়ের করা হেফাজতে নির্যাতন মামলায় এমন অভিযোগ করা হয়। নিয়ম ভেঙ্গে মনোহরদী থানার এসআই নাজিম ও এএসআই শাহিন সরকার এ ঘটনায় অংশগ্রহণ করেন। তিনি মামলার অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন মনোহরদী থানায় কর্মরত অবস্থায় নানা অনিয়মের প্রতিবাদ করায় তার উপর নাখোশ এএসআই সোহেল। সেখানকার এক ছাত্ররীগ নেতাকে হয়রানী করায় সেখান থেকে ক্লোসড হন তিনি। ক্লোসড হওয়ার জন্য এএসআই সোহেল সাংসদ হুমায়ন ছেলে সাদী ও ডিবির এসআই খোকন এর প্রতি ক্ষুব্দ হন। সে কারনেই কালাম কে নির্যাতন করে এসব কথা বলানো হয়েছে ও তা মোবাইল দিয়ে ভিডিও রেকর্ড করা হয়।
জোড়পূর্বক এ স্বীকারোক্তি আদায় নিয়ে বেশ কয়েকটি গনমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। ঘটনা পর থেকেই এসআই খোকন দাবী করে আসছেন মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়ার কারনেই ষড়যন্ত্রের স্বীকার হয়েছেন। অপরদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খোকন চন্দ্র সরকার মাদক ব্যবসায় জড়িত এমন পোস্টও দেয়া হয়েছে। যা নিয়ে বেশ মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃস্টি হয়েছে নরসিংদীতে।
এসব বিষয় নিয়ে কথা হয় নরসিংদীর পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুন (বিপিএম পিপিএম) এর সাথে। তিনি জানান, ডিবির এসআই খোকনে মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত এমন তথ্য প্রমাণ এখনও আমরা পাইনি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অপরদিকে কালাম কে গ্রেফতার করে জোড়পূর্বক স্বীকারোক্তি আদায় করেছে এমন অভিযোগও পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে রাগ ক্ষোভের ফলেই এসব ঘটছে। এখানে অনেকগুলি বিষয় সামনে এসেছে। প্রতিটি বিষয় গভীরভাবে খতিয়ে দেখা হবে। অন্যায় যেই করুক কোন ধরনের ছাড় দেওয়া হবেনা। 

#
নরসিংদী
৫/৬/১৮ইং  

No comments:

Post a Comment